কেমন ছিল আমার কাছে আমার চিঠিতে লেখা শিক্ষার্থীদের গল্পগুলো _

এমন উদ্যোগ তাদের কাছে প্রথম,
প্রথম বারের মত অনেকে নিজেদের নিয়ে ভাবছে হয়ত।

সেই ভাবনা থেকেও কেউ কেউ যেন জীবনের চরম বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছে, কেউ আবার নিজেকে কল্পনা করেছে ১০ বছর পরের সেই সফল আমি তে, যেখানে সে তার সফলতার গল্পের স্বার্থক নায়ক।

ছেলে মেয়ের তুলনা যদি করি, তাহলে আমি ছেলেদের চিঠিতেই জীবনের কঠিন বাস্তবতা বেশি পেয়েছি। মেয়েদের ভবিষ্যৎ পরিবারের সিদ্ধান্তের উপর কতটা নির্ভরশীল তারও আভাস আছে কোনো চিঠিতে। ছেলেমেয়ে সকলেই দারুণ সব স্বপ্ন দেখে।

কিন্তু নবম/ দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অনেকে ধারণা নেই যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ডাক্তার হওয়া যায় না। এই ব্যর্থতা কী আমাদের নয়? আমি অবাক হয়েছি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ পড়ার স্পষ্ট স্বপ্ন দেখে।

একটি ছেলের সরল স্বপ্ন ছিল, আমি একটি বাইক কিনতে চাই, কিন্তু আমরা গরিব। আমি পড়ালেখা করে বড় চাকরি করে বাইক কিনব। কী নির্মল স্বপ্ন বলুন?

একটা অংশের চিঠিতে আমি স্পষ্ট আর্থিক অস্বচ্ছলতার স্পষ্ট উল্লেখ পেয়েছি, যা তাদের স্বপ্ন পূরণে বাধা হতে পারে বলে তাদের সন্দেহ, তবুও তারা লড়াই করতে চাই, তারা বিশ্বাস করে যে তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।

ছেলেদের মধ্যে সরকারি চাকরির একটা প্রবণতা আছে, আবার কোনো চিঠিতে ঘুষের বেড়াজালে বড় ভাইয়ের চাকরি না হওয়ায় তার বিদেশ যাত্রা এবং নিজেও নিরাশ হয়ে ভাইয়ের কাছে চলে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। বুজছেন তো আমরা কতটা প্রভাবিত হই আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার দ্বারা ?

সব চিঠিতেই একটা দারুণ বিষয় উল্লেখ আছে তা হলো, বাবা-মায়ের দেখাশুনা করতে চাই, অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই, দেশের উন্নয়ন করতে চাই।

বাবার মৃত্যুতে জীবনের কঠিন বাস্তবতায় কারো কারো স্বপ্নগুলো ছোট হয়ে এসেছে।

কেউ আবার শুধুই মানুষের মত মানুষ হতে চাই৷

কেউ আবার আর্মি, ব্যবসায়ী, সরকারি পুলিশ সব হতে চাই।

এমনই ছিল আমার কাছে আমার চিঠির স্বপ্ন, গল্প, কাহিনীগুলো।

তাদের সব স্বপ্নগুলো পূর্ণতা পাক এটায় প্রার্থনা ।

লিখেছেন : ইমরান রাব্বি